আজ দুপুর ২.৩০ টায় গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসানের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও প্রোপাগাণ্ডার প্রতিক্রিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে ফারুক হাসান সেদিনের হামলার বর্ণনা দেন এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন বলেন, কেন এই হামলা? এই হামলার ইন্ধনদাতা কারা? শোনা যাচ্ছে, রাঘববোয়ালরা আসামিদের জামিন করাতে বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপ করবে। তাই যদি হয়, তবে কিসের রাষ্ট্র সংস্কার, কিসের বিচারবিভাগের স্বাধীনতা? আমাদের স্পষ্ট কথা, দোষীদের ছাড় দেওয়া চলবেনা। গণঅভ্যুত্থানে দুই শ্রেণীর মানুষ আহত হয়েছে। আন্দোলনের পক্ষে এবং আন্দোলন প্রতিরোধ করতে গিয়ে। গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধের শক্তি এখন আহতলীগে পরিণত হয়েছে। এরা কখনো স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জিম্মি করছে, কখনো আহতলীগের মধ্য থেকে উপদেষ্টা দাবি করছে, কখনো সড়ক অবরোধ করছে। প্রকৃত আহতরা হাসপাতালের বিছানায়। আর অপরাধীরা বিভিন্ন জায়গা কুকর্ম করছে। যারা ফারুক হাসানের উপর হামলা করেছে এরা হাসিনার পেতাত্মা। এদের কোন ছাড় নেই ক্ষমা নেই। যদি এরা জামিন পায়, তবে ধরে নিবো, এটা কোন ছোটখাটো বিষয় না। বড় উদ্দেশ্য নিয়ে ফারুক হাসানের উপর হামলা করা হয়েছে। কেন আ.লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না, কিভাবে ওবায়দুল কাদের পালিয়ে গেলো? শেখ পরিবারের একজনও কেন আটক হলো না? এখনো শহীদ পরিবার ক্ষতিপূরণ পেলো না, শহীদের তালিকা হলো না, কেন আহতরা সুচিকিৎসা পাচ্ছে না। এই কথা বললে আজকাল মাইর খেতে হচ্ছে। ২০২৪ এর কোন যোদ্ধা অপরাধ করলেই কি ক্ষমা পাবে? তাহলে তো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ওবায়দুল নিষ্পাপ!
সংবাদ সম্মেলন শেষে হতেই শোনা যায়, অপরাধীরা গ্রেফতারের ১১ ঘন্টার মাথায় জামিন পেয়েছে। পরবর্তীতে অন্যান্য সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে রাশেদ খাঁন বলেন, ফারুকের উপর হামলার মামলায় গ্রেফতার আসামিরা মজামিন পেয়েছে। অথচ ফারুক এখনো হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। ৩৭৯, ৩২৬, ৩০৭ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হলেও বিচারবিভাগের উপর প্রভাব খাটিয়েছে জামিন নিয়েছে। এখন প্রমাণিত হলো হামলায় রাঘববোয়ালদের সংশ্লিষ্টতা ও ইন্ধন ছিলো। বিচারবিভাগ স্বাধীন হবে, এই রাষ্ট্রের পরিবর্তন এই সরকার করবে, এটা আমি আর বিশ্বাস করি না। রাষ্ট্র সংস্কারের নামে ক্ষমতার চেয়ারের স্বাদ নেওয়ার সময়সীমা এরা দীর্ঘায়িত করবে। এর বাইরে আর কোনকিছু করতে পারবেনা।
গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি
ফারুক হাসান বলেন, আমার উপরে যারা শহীদমিনারে হামলা চালিয়েছে তারা কেউই আহত নন কিংবা শিক্ষার্থী নন, তারা পরিষ্কারভাবে সন্ত্রাসী। সরকার এই সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতেও গড়িমসি করছে। এতেই বুঝা যাচ্ছে যে এই হামলাকারীদের সাথে তাদের ভালো একটা কানেকশন আছে। তারা আমার কাছে লোক পাঠিয়েছিল আপোষ করার জন্য, কিন্তু আমি জানিয়েছি ভূলের ক্ষমা হয় অপরাধের কোন ক্ষমা হয়না। কিন্তু আমি হাসপাতালে বিছানায় কাতরাচ্ছি, এই অবস্থায় তারা জামিন পেয়ে গেলো? এই কি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা? এই রাষ্ট্রের আদৌও সংস্কার হবে?
গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, ফারুক হাসানের উপর হামলা এবং হামলাকারীদের জামিনের মধ্যে দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয় বিচার বিভাগ এখনো স্বাধীন হয়নি। প্রকাশ্যে দিবালোকে শহীদ মিনারে ফারুক হাসানের উপর হামলা হয়েছে সেই হামলার ভিডিও থাকার পরেও আসামীদের জামিন দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থা ছিলো আওয়ামীলীগ শাসনামলে তাহলে আর কিসের সংস্কার হলো জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে?
আমাদের রক্তের মধ্যে দিয়ে আজকের এই জুলাই আগষ্টের বিপ্লব হয়েছে আর আজ আমাদের ফারুক হাসানের উপর হামলা! এটা কোনো ভাবেই গণঅধিকার পরিষদের নেতা কর্মীরা মেনে নিবে না।
সংবাদ সম্মেলনের সময় গণঅভ্যুত্থানে আহত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।