সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি যদি পুনরায় নির্বাচনে জয়ী হন, তবে তার চাওয়া হচ্ছে ইসরাইল গাজা যুদ্ধ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করুক।
সম্প্রতি টাইমস অব ইসরাইলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ট্রাম্প গত জুলাই মাসে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো রিসোর্টে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ওই বার্তা দিয়েছিলেন।
সাবেক এক মার্কিন কর্মকর্তা এবং এক ইসরাইলি কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্প স্পষ্টভাবে নেতানিয়াহুকে বলেছেন, তার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই যেন গাজা যুদ্ধ শেষ করা হয়।
ট্রাম্প মনে করেন, এই সংঘাতের দ্রুত সমাধান প্রয়োজন এবং নেতানিয়াহুকে তিনি সরাসরি এই যুদ্ধের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেন।
ইসরাইলের বর্তমান অবস্থান এবং নেতানিয়াহুর বক্তব্য
এদিকে নেতানিয়াহু আগে থেকেই ঘোষণা দিয়েছেন যে, যুদ্ধ শেষ হলেও ইসরাইল তার নিরাপত্তার স্বার্থে গাজার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখবে।
তিনি বলেছেন, গাজার সঙ্গে একটি বাফার জোন তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা হামাসের কার্যকলাপ পুনরায় শুরু হওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।
সম্প্রতিও এক বক্তব্যে নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজার যুদ্ধ এখনও শেষ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
তিনি একটি দলীয় বৈঠকে আরও বলেন, ইসরাইল ১০১ জন বন্দির মুক্তির শর্তে গাজা যুদ্ধ শেষ করার দাবি মানতে পারে না।
ট্রাম্পের অবস্থান এবং মার্কিন নীতি
ট্রাম্পের অনুরোধটি ছিল সরাসরি এবং নির্দিষ্ট। তিনি বলেন, তার ক্ষমতা গ্রহণের আগেই গাজা সংঘাতের নিষ্পত্তি করতে হবে। এছাড়া বন্দিদের মুক্তি নিয়ে তার একটি শক্ত অবস্থান রয়েছে এবং এ বিষয়ে ইসরাইলকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের মতে, বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি জরুরি এবং যেসব পক্ষ এখনো আমেরিকান বন্দিদের আটকে রেখেছে, তারা বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া পেতে পারে।
ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাস্তবতা
এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোটে রয়েছে কিছু কট্টর ইহুদিবাদী মন্ত্রী, যারা বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে হামাসের সঙ্গে কোনো স্থায়ী অস্ত্রবিরতির পক্ষে নেই। এর ফলে গাজা যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে নেতানিয়াহুর জন্য রাজনৈতিক বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
ইসরাইলের বেশ কিছু কর্মকর্তা মনে করছেন, গাজার জন্য একটি বিকল্প ব্যবস্থা প্রয়োজন। কিন্তু এই মুহূর্তে এমন কোনো ব্যবস্থার অভাবের কারণে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। নেতানিয়াহুর কট্টরপন্থি মন্ত্রীরা তাকে গাজার শাসনের জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সহায়তা গ্রহণ করতে দিতে চান না। যা যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ।
অন্যদিকে, যদি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আসন্ন নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্ককে ঘিরে জটিলতা আরও বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে ইসরাইলের বিরোধী দলের এক সংসদ সদস্য বলেন, ‘নেতানিয়াহু এর আগেও যুক্তরাস্ট্রের ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে যে কোনো দ্বন্দ্ব সামলাতে সক্ষম হয়েছেন এবং এই অবস্থানকে তিনি প্রায়ই তার ক্ষমতার প্রকাশ হিসেবে তুলে ধরেন। কিন্তু ট্রাম্পের সঙ্গে যে কোনো দ্বন্দ্ব তিনি এড়াতে চান এবং সেই সুযোগ থাকলে তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন’। সূত্র: টাইমস অব ইসরাইল