বেকার না থেকে ঘরে বসে ছাগল পালন করে মাসে লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন নানিয়ারচরে হালিম মিয়া। পূর্বে বিভিন্ন ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বেকার হয়ে পড়েন তিনি। অবশেষে ব্লাক বেঙ্গল ও জমুনা পাড়ি জাতের ছাগল পালনের মধ্য দিয়ে তিনি পেয়েছেন অর্থনৈতিকভাবে মুক্তির পথ৷
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ব্লাক বেঙ্গল ও জমুনা পাড়ি জাতের হৃষ্টপুষ্ট ৪০টি ছাগল।
এসব ছাগল পালনের মাধ্যমে তার অভাব ঘুচতে শুরু করেছে বলে কথা তিনি জানান, ইতোপূর্বে সে কাঁচা তরকারির ব্যবসা করেছেন। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বহুবার। পরে ৮টি ব্লাক বেঙ্গল ও জমুনা পাড়ি জাতের ছাগল পালনের মধ্য দিয়ে এখন সে ৪০টি ছাগলের মালিক। এর আগে সে ৩০ থেকে ৪০টি ছাগল বিক্রি করেছেন এবং এখন বানিজ্যিকভাবে উন্নত জাতের ছাগল উৎপাদন করতে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
হালিম মিয়া আরো বলেন, সঠিক ব্যবস্থাপনা, নিয়মিত টিকাদান ও আধুনিক খামার সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে পাহাড়ি অঞ্চলে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যাবে। একই সাথে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই কর্মসংস্থান সৃষ্টি সম্ভব হবে বলে মনে করেন। পাশাপাশি সরকারিভাবে কোন প্রণোদনা বা সহযোগিতা পেলে তিনি বানিজ্যিকভাবে এই খামার পরিচালনা করতে চান বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হালিম মিয়ার ছাগলের খামারটি এলাকায় সুনাম কুড়িয়েছে। সে ছাগল পালন করে এখন লাভবান হয়েছেন।
পাহাড়ে ছাগল পালনের বিষয়ে জানতে চাইলে নানিয়ারচর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সমাপন চাকমা জানান, পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর প্রাকৃতিক ঘাস, গুল্ম ও ঝোপঝাড় রয়েছে। এই পরিবেশে ছাগল পালনের খরচ তুলনামূলক কম। ছাগলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকায় পাহাড়ি পরিবেশে এরা দ্রুত বেড়ে ওঠে। বছরে দুইবার বাচ্চা দেয় এবং প্রতিবার গড়ে ২ থেকে ৩টি বাচ্চা জন্ম দেয়। ছাগলের মাংস সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা সবসময়ই বেশি। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের চামড়া ও বিশ্ববাজারে বিখ্যাত। যা রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। একই সাথে জমুনা পাড়ি জাতের ছাগল পালন ও বেশ লাভজনক।
নানিয়ারচর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সমাপন চাকমা আরো জানান, নানিয়ারচর উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে পিপিআর টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিছু ইঞ্জেকশন বিনামূল্যে এবং কিছু ইঞ্জেকশন এর মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হয়। এছাড়াও আমাদের মাঠকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরু ছাগলের বিভিন্ন সেবা দেওয়া হয়।
এছাড়াও বানিজ্যিকভাবে কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত খোঁজ খবর নেওয়া হয়। যাতে করে কোন প্রতিষ্ঠানে রোগ বালাই না হয় এবং এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক ছাগল পালনের মধ্য দিয়ে লাভবান হয়।
