desh somoy logo
ঢাকাThursday , 9 October 2025
  1. অর্থনীতি
  2. আইন আদালত
  3. আবহাওয়া
  4. ইসলাম
  5. খেলা
  6. চট্টগ্রাম বিভাগ
  7. চাকরি
  8. ঢাকা বিভাগ
  9. ধর্ম
  10. প্রযুক্তি সময়
  11. বরিশাল বিভাগ
  12. বানিজ্য
  13. বাংলাদেশ
  14. বিনোদন
  15. বিশ্ব
আজকের সর্বশেষ সবখবর

৪৮ হাজার শ্রমিকের উপর মামলা ছিলো যেগুলো এখন নেইশ্রম উপদেষ্টা

দেশ সময়
October 9, 2025 10:56 pm
Link Copied!

৪৮ হাজার শ্রমিকের উপর মামলা ছিলো যেগুলো এখন নেই, এই কাজ অন্য কোনো সরকার করতে পারতো না” সিজিএস আয়োজিত মুক্ত আলচনায় শ্রম উপদেষ্টা

“গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য মুক্ত আলোচনা” শীর্ষক ধারাবাহিক আয়োজনের অংশ হিসেবে, সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)-এর আয়োজিত ‘শ্রম অধিকার’ বিষয়ক আলোচনাটি ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, দুপুর ৩ টায় সিরডাপ (সেন্টার অন ইন্টিগ্রেটেড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ায়রম্যান ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, আওয়াজ ফাউন্ডশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের প্রেসিডেন্ট রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, জাতীয় নাগরিক কমিটির শ্রমিক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারী মাজহারুল ইসলাম ফকির, রিক্সা, ভ্যান, ইজি বাইক শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম নাদিম, বাংলাদেশ লেবার কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম নাসিম, কর্মজীবী নারী’র অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা, কর্মজীবী নারী-এর সহ সভাপতি উম্মা হাসান ঝলমল, গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল কাদের হাওলাদার, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক, গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের নির্বাহী সমন্বয়ক মোহাম্মদ সোহেল।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর গভার্ন্যান্স স্টাডিজ এর সভাপতি জিল্লুর রহমান।

জিল্লুর রহমান বলেন, সংস্কার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি ক্রমাগত চলতে থাকবে। ২০০৭ – ২০০৮ সালে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু কোন সংস্কার কাজ হয় নাই। ফলে সংস্কার শব্দটি ঘৃণিত শব্দে পরিণত হয়েছে। জুলাই অভভুথানের পর আবারও সংস্কার শুরু হয়েছে। বর্তমান সরকার অনেকগুলো কমিশন করেছে। কিন্তু তেমন কোন কাজ হয় নি। ১৯৯১ সালে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন্নের উদ্যোগে ১৯টি টাস্ক ফোরস করেছিল। কিন্তু পরে আর এটি খুলে দেখা হয় নাই। আমাদের মনস্তত্ত্বে পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের সম্পূর্ণ ব্যবস্থাকে গনতন্ত্রে না আনলে ভাল কোন পরিবর্তন হবে না। বর্তমান সরকার অনেক বিষয়ে কমিশন করলেও শিক্ষা নিয়ে কোন কমিশন করে নাই। তেমনি শ্রম নিয়েও কিছু করে নি। নির্বাচন মানেই গনতন্ত্র নয়। কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন একটি প্রাথমিক ধাপ। নির্বাচনকে কেউ গুরুত্ব না দিলে বুঝতে হবে তার মধ্যে গণতন্ত্রের অভাব আছে।

ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয় পূর্বে যেখানে ছিলো সেখান থেকে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ দাবিদাওয়ার যায়গা, যে-ই সুযোগ পায় সে-ই দাবী করে। শ্রমিক নেতাদের কাজ শ্রমিকের পক্ষে কাজ করা না বরং তাঁদের নিজেদের স্বার্থ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে থাকে। আগের শ্রমিক আইন আর এখনের শ্রমিক আইনের অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে। আমরা বাংলাদশে কয়েকটি কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। তিনটি বড় দাবী আমরা অনুমোদন করেছি, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, হ্যারাস্মেন্ট ও সুরক্ষা। ই ইউ, আই এল ও-এর সঙ্গে আমি দেখা করেছি, এদের সঙ্গে বিভিন্ন কিছু প্রসঙ্গে কথা হয়েছে। ইউনিয়নগুলোতে গণতান্ত্র অনুশীলন করতে হবে। মালিকরা কোনো শ্রমিককে ব্ল্যাকলিস্ট করতে পারবে না। কাউকে ব্ল্যাকলিস্ট করলে মালিককে মন্ত্রনালয়ে যেতে হবে। আমরা মাতৃকালীন ছুটি বাড়িয়েছি। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার কথাও আপনার চিন্তা করতে হবে। আমরা সব কিছু মিলিয়ে যতটুকু সম্ভব ততটুকু করার চেষ্টা করছি। ফ্যাক্টরি,ইন্ডাস্ট্রিগুলো নির্দিষ্ট মানদণ্ডে আসতে সময় লাগবে। যারা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে আছে যেমন নির্মাণ খাতে শ্রমিকদেরকে আমরা রেজিস্টার করার পদক্ষেপ নিয়েছি। যদি বড় নির্মাণ কোম্পানিগুলো রেজিস্টার্ড না হয় তাহলে তাঁদেরকে সরকারি কোনো টেন্ডার যেনো দেওয়া না হয়, সেই বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কীভাবে ইনফরমাল সেক্টরের শ্রমিকদেরকে আমাদের নীতিমালার আওতায় আনা যায়। আমি অনেক দুষ্টু মালিকদের উপর অনেক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। তাদের পাসপোর্ট জব্দ করেছি, বাড়ি আটক করেছি, অন্য কোনো সরকার এগুলো করতে পারবে না, কারণ মন্ত্রীরাই ছিল কারখানার মালিক। ৪৮ হাজার শ্রমিকের উপর মামলা ছিলো যেগুলো এখন নেই, এই কাজ অন্য কোনো সরকার করতে পারতো না।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, আমরা অনেক কথা বলি কিন্তু কাজে সেটার প্রতিফলন দেখা যায়না, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষেত্রেও এটি সত্য। শ্রমিকদের জীবন-যাপন এবং মানোন্নয়নের জন্য তেমন কোনো কিছুই করা হয়নি কিন্তু কমিশন ঠিকই হয়েছে। আমরা অগ্রগতি যা করি তার থেকে অন্য দেশ অনেক বেশি অগ্রগতি করে ফেলে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার বৃদ্ধি, দেশের অভ্যন্তরে কাঁচামালের এবং সার্ভিসের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক মজুরী দিতে হবে এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, রপ্তানীতে বহুমুখীতা এবং বৈচিত্র আনার জন্যও চেষ্টা করতে হবে। আমাদের দেশে শ্রম শক্তির ৮৫% অনানুষ্ঠানিক ভাবে কাজ করে থাকে, এইজন্য তাদের আয় থাকে কম এবং একই সময়ে তাদের কাজের কোনো নিরাপত্তা নাই। শ্রমিকদের প্রতি সরকারেরও দায়িত্ব রয়েছে। শ্রমিকদের ক্ষমতায়নের মধ্যে দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি করা সম্ভব। মানব সম্পদের উন্নয়নও এক প্রকার বিনিয়োগ। সামাজিক সুরক্ষা বলয়কে আরো শক্তিশালী করে তুলতে হবে। স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। সামাজিক সুরক্ষা বলয় তৈরি করার অনেক খরচ আছে যেমন সত্য, এই বলয় তৈরি না করা হলে দীর্ঘমেয়াদে দেশের ক্ষতি আরো বেশি হবে এটাও সত্য। জ্বালানী খাতেও নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহার করতে হবে অথবা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত হওয়ার পরে আমাদের কাছে বিনিয়োগ আসবেনা, কারণ আমরা সেই সকল মানদন্ড পূরণ করতে পারবো না।

সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, কাজের চেয়ে কথা বেশি হয়েছে। এটি দুর্ভাগ্য। আমাদের মনস্তত্ত্বে পরিবর্তন আনা দরকার। রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর আমাদের কিছু ভাল পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের নতুন আইন করার দরকার নেই। যেই আইন আছে তার প্রয়োগ করতে হবে। কর্মসংস্থান হবে যেখানে চাহিদা থাকবে। আমাদের ২৬ লাখ বেকার আছে। অনেকে আছে এদের মদ্ধে যারা গ্রাজুয়েট। এটির সমাধান বের করতে হবে। এখন ফ্যাক্টরিতে শিক্ষিত লোক পাওয়া যাচ্ছে না। তারা আরও কম বেতনে অন্য কোথাও কাজ করছে। বাংলাদেশের তরুণরা বেশিরভাগ বি সি এস, ব্যাংক ও বিদেশের দিকে যাচ্ছে। এটির বিকল্প ভাবতে হবে। আমাদের বেশি পুঁজি আসে মিডিয়াম ফ্যাক্টরি থেকে। কিন্তু তারা ব্যাংক থেকে সাহায্য কম পায়। সরকার এই সমস্যার জন্য মূল্যস্ফীতি কমাতে ব্যাংকের সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি একটি মাত্র সমাধান হয় না। আমাদের সুদের হার ১৩%। এর মাঝে ব্যবসা করবে কি করে। এই হার কমাতে হবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে আমাদের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। শ্রমিকদের অধিকারের কথা শ্রমিকদের নেতৃবৃন্দ থেকে আসতে হবে। এটি রাজনীতিবিদদের কাছে গেলে তারা তাদের ন্যায্য অধিকার পাবে না।

সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন শব্দটা ব্যবহার করার জন্য ধন্যবাদ জানাই, সংস্কার শব্দটি আমাদের জন্য এখন একটি বিরক্তির জায়গা। শ্রমিকদের আমরা সংগঠিত করতে পারিনি, শ্রমিকদেরকে যথাযথভাবে শ্রমিক হিসাবে কোনো সামাজিক সম্মানজনক স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না। আমাদের প্রবাসী শ্রমিকদের দিকে নজর দিতে হবে, তাঁরা দেশের অর্থনীতিতে অনেক বড় একটি প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশের বড় একটি সমস্যা হচ্ছে দক্ষতার অভাব। ট্রেড ইউনিয়ন, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে শ্রমজীবী মানুষের আইনগত স্বীকৃতি অনেক গুরুত্বপূর্ণ যা নিয়ে তেমন কোনো কাজ হচ্ছেনা। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর অর্থনৈতিক নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে, সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সামাজিকভাবেও পরিবর্তন দরকার কিন্তু সেই দিকে আমরা কোনো নজর দিচ্ছিনা। শ্রম আইন অনেক সীমিত, শ্রমিকদের তাদের সমস্যা নিয়ে যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। পাশের দেশে শ্রম কমিশন আছে কিন্তু আমাদের দেশে এই ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, যেই কারণে প্রশাসনের কোনো জবাবদিহিতার জায়গা নেই। শ্রমিকদের লক্ষ্য করে আমাদের কোনো সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই, শুধুমাত্র হতদরিদ্র মানুষের জন্য আছে। যার কারণে শ্রমিকরা কোনো কারণে তাঁর কর্মক্ষমতা হারায় তাহলে তাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।

নাজমা আক্তার বলেন, আমরা শ্রী লংকাকে দেখে আমরা জুলাই আন্দোলন করেছি। তারা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে তাহলে বাংলাদেশ কেন পারবে না? বিদেশে ৪০ বছর হয়ে গেলেও তাদের চাকরি পেতে সমস্যা হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে কারো বয়স ৪০ হয়ে গেলে তাকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কারণ তার প্রোডাক্টিভিটি কমে গিয়েছে। শ্রমিকদেরকে চাল, ডাল দেওয়া মানে তাদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা নয়।

রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ধনীরা তাদের সম্পদ রাখে বিদেশে। মধ্যবিত্তরা তাদের সন্তানকে বিদেশে পড়ালেখা করায় এবং ঐখানেই থেকে যায়। শ্রমিকরাই এই দেশে থেকে যায়। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি নেগ্লেক্টেড শ্রম মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রনালয়ের বাজেট সবচেয়ে কম। গত অর্থবছরে মাত্র ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

আতিকুর রহমান বলেন, শ্রমিকরা তাদের অধিকার সহজে পায় না। শ্রমিকের অধিকার নিয়ে কথা বললে তার উপর ফৌজদারি মামলা করা হয়। আমাদের জবাবদিহিতার ঘাটতি আছে। ১১টি কমিশনে শ্রমিক নিয়ে কোন কথা উঠে নাই। শ্রমিকদের জন্য শিল্প এলাকাতে হাসপাতাল তৈরি করতে হবে।

জলি তালুকদার বলেন, কোন আন্দোলন হলে শ্রমিকদেরকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়। জুলাইয়ে শ্রমিকরাও যোগ দিয়েছিল। আমরা একটি ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৮ বছর ঘুরার পর তা করতে পেরেছি। শ্রমিককে বাদ দিয়ে ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে চিন্তা করলে হবে না। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে প্রায় আগুন লাগে, বেতন দেয় না, তারা রাস্তায় নামলে তাদেরকে গুলি করা হচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। মাতৃকালীন ছুটি শ্রমিক শ্রেণিরা মাত্র ৪ মাস পায়।

মাজহারুল ইসলাম ফকির বলেন, শ্রম সেক্টরে আগের যেই বন্ধ-বাধকতা ছিল তা এখনও আছে। কারখানাগুলোতে গণতন্ত্র নেই। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে প্রাতিষ্ঠানিক করতে হবে। বাংলাদেশে কোন প্রতিষ্ঠানের মালিক রাষ্ট্রের চেয়েও ক্ষমতাশীল হয়ে গিয়েছে। জুলাই অভভুথানে ৮০০ শ্রমিক নিহত হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব শ্রমিকরা যেন তাদের মতামত প্রদান করতে পারে।

আরিফুল ইসলাম নাদিম বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বাংলাদেশে কোনো যথাযথ শ্রম আইন হয়-ই নাই, ব্রিটিশ আমলের ৩-৪টা শ্রম আইন নিয়ে এসে সেইটা দিয়ে আমরা একটা আইন তৈরি করেছি। সেটাও শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের জন্য, দেখা যায় সেইটাও সব শ্রমিকরা পায়না। শ্রমিকরা দাবী নিয়ে রাস্তায় নামলে তাঁদের নামে মামলার পর মামলা দিয়ে যাচ্ছেন, কেউ জেল গেট থেকে বের হওয়ার পরেই আরেক মামলায় তাকে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতোই ব্যবহার করে আমাদের দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলো। দেশে শ্রমের মর্যাদা দেয়া হয়না, মজুরী দেয়া হয়না, এইজন্যই দেশের শ্রমিকরা দেশের বাইরে চলে যায়।

অ্যাডভোকেট এ কে এম নাসিম বলেন, শ্রম কমিশনের সঙ্গে কাজ করার সুবাদে বলছি ইউনিয়নের সংখ্যা পাঁচটার বেশি হতে পারবেনা এমন কিছু কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়নি। যদি ৪০% অংশ নিয়ে একটি ইউনিয়ন তৈরি করে সেখানে বাকি ৬০% এর অংশগ্রহণ হয়না। একাধিক ইউনিয়ন তৈরি হলেও তার সমস্যা আছে, বর্তমানে তিনটি ইউনিয়ন নিয়েই মালিকরা সমঝোতায় আসতে পারে না, আরো ইউনিয়নের সঙ্গে সমঝোতা করবে কী করে? গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইউনিয়নদের অংশগ্রহণ করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। গৃহকর্মীদের অধিকার নিয়ে গত এক দশক ধরে অনেক কথা বলা হয়েছে কিন্তু এটাকে নিয়ে আমরা দৃশ্যমান কোনো কাজ করতে পারিনি।

সানজিদা সুলতানা বলেন, সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় শ্রমিকের অংশগ্রহনের কথা বলাটা অনেক প্রয়োজন। রানা প্লাজার কথা রাষ্ট্র বলেন অথবা ব্যবসায়ী অংশ বলেন। কিন্তু কেউই কি রানা প্লাজার ট্র্যাজিডিকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে? রানা প্লাজা দিবসকে কেউই স্বীকৃতি দেয়নি। অনানুষ্ঠানিক খাতের অনেক বড় একটি অংশ নারী শ্রমিক, তাঁদের কোনো দর কষাকষির সুযোগ নাই। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে একজন নারীকে বাসার সকল কাজ করে তারপরে কারখানায় আসতে হয়। তারপরেও সে অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হতে পারেনা, তাঁর স্বামী বা অন্য কারো দ্বারা সে নিয়ন্ত্রিত। সামাজিক সুরক্ষার বলয়ের কোনো কিছুই শ্রমিক নিতে পারেন না, কারণ তাঁদের কী কাগজ দরকার কিভাবে সেই ভাতা নিতে হবে সেটাই তাঁরা জানেনা, এখানেও বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে প্রকৃত শ্রমিকরা তাঁদের পাওনা পায়না।
উম্মা হাসান ঝলমল বলেন, গত ১ বছরে ভেবেছিলাম যে আমরা আশার আলো দেখব কিন্তু তা থেকে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা আমাদেরকে নিতে হবে। কোন শ্রমিকের চাকরি চলে গেলে তাদের এন আই ডি দেখে পরবর্তীতে চাকরি দেওয়া হয়। কোন শ্রমিকের বয়স ৩৫ হলে তাকে শ্রমিক হিসেবে কেউ নিতে চায় না। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের নিরাপত্তা নেই। অথচ তাদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
ফারুক হাসান বলেন, বাংলাদেশ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা বিদেশে পাচার করে দেয়া হয়েছে। মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি একই ব্যাক্তি। এই অবস্থা হলে শ্রমিকদের অধিকারের পক্ষে লড়াই করা কীভাবে সম্ভব হবে? শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে মালিকদের কোন চিন্তা নেই। আইন উপদেষ্টা খুব ফলাও করে এয়ারপোর্টে লাউঞ্জের কথা বলেছে কিন্তু সেখানে সাইনবোর্ড ছাড়া কিছু নেই। গার্মেন্টসের ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু গৃহকর্মীদের ন্যূনতম বেতন ঠিক করা হয় নাই। যারা আগামীতে ক্ষমতায় আসবে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে হবে তারা কি মালিকদের পক্ষ হয়ে তাদের অধিকারের জন্য কাজ করবে কিনা, নাকি মালিক ও শ্রমিক সকলের সমান অধিকারের জন্য কাজ করবে। মালিকদের জন্য কাজ করলে তাদেরকে আমরা ভোট দিব না।

আবদুল কাদের হাওলাদার বলেন, শ্রমিকরা একটি প্রতিষ্ঠানের অঙ্গ, কিন্তু আমাদের সেভাবে দেখা হয়না। প্রতিবছর আমাদের সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং দেয়া হতো এক সময়, এখন আর সেটা করা হয়না। যেই কারখানা শ্রমিকের পেটের রুটি রুজি তৈরি করে সেইটা কোনো শ্রমিকে আগুন দেয়না। কারা আগুন দিলো? এগুলো নিয়ে কোনো তদন্ত হলো না। একজন ইন্ডাস্ট্রির মালিক লাভ দিয়ে আরেকটা ইন্ডাস্ট্রি করবে, তার বদলে সে শ্রমিকের টাকা, ব্যাংকের টাকা পাচার করে বেগমপাড়ায় গিয়ে বাড়ি করে। নিজের দেশের কথা, শ্রমিক এবং মানুষের কথা কেউ চিন্তা করে না। আমার বোন কাজ করে তাঁর বাবা-মা পরিবারকে চালায়, সেই বোনকে যে কাজ করতে দিবেনা সেই রাষ্ট্র তো আমরা চাইনা।

আবদুল মালেক বলেন, অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে যে শ্রমিক আছে তাঁরা সবচাইতে অবহেলিত, তাঁদের বাজারে কাজ না থাকলে তাঁদের পেটে কোনো খাবার থাকেনা। সত্যিকারের যারা শ্রমিক তাঁরা ইউনিয়ন করতে গেলে তা করতে পারে না, শুধুমাত্র মালিকপক্ষের তাঁবেদারি করা শ্রমিকরাই ইউনিয়ন করতে পারে।
অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিকদের সামাজিক মর্যাদা নেই। আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে আমরা কি আসলেই শ্রমিকদের অবস্থার পরিবর্তন চাই কিনা?

মোহাম্মদ সোহেল বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান কম। যেই পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে তা দেশে বিনিয়োগ হলে এমনটি হত না। অভভুথানের পরেও শ্রমিকদের উপর গুলি চালানো হয়েছে। অভভুথানের পর ২০২৪ সেপ্টেম্বরে একটি ১৮ দফা উপস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়নে আমরা কি করেছি?

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।