তাকে মানসিকভাবে হয়রানি করা হয়েছে বলেও সুইসাইড নোটে লিখেছেন নায়াকা। ছবি: সংগৃহীত
প্রায় ২ বছর ধরে বেতন বন্ধ। বার বার বকেয়া টাকা চেয়েও কাজ হয়নি। সেই সঙ্গে দিনের পর দিন চলছিল মানসিক নির্যাতন। প্রতিবাদে পঞ্চায়েত দপ্তরের সামনে আত্মহত্যা করেন এক সরকারি কর্মচারী। ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের চামরাজনগর জেলায়।আত্মহত্যা করার আগে একটি সুইসাইড নোট লেখেন চিকুসা নায়াকা। সেখানে তিনি জানান, ২০১৬ সাল থেকে হোঙ্গানুরু গ্রাম পঞ্চায়েতে কর্মরত ছিলেন তিনি। তার সুইসাইড নোটে তিনি বলেছেন, বারবার তার বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেয়ার অনুরোধ করা এবং এমনকি অসুস্থতার কারণে পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পরেও কর্মকর্তারা কোনো সাড়া দেননি।
নিজের শেষ জবানবন্দিতে চিকোসা নায়াকা লিখেছেন, ‘২০১৬ সাল থেকে আমি ওয়াটারম্যানের কাজ করছি। ২৭ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেয়ার জন্য পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিক (পিডিও) এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে বার বার আবেদন করেছি। কিন্তু তাঁরা আমার কথায় গুরুত্ব দেননি। এমনকি আমি জেলা পরিষদের সিইও-র কাছেও দরবার করেছিলাম। তাতেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।’
আরও জানান, ‘আমি পঞ্চায়েত উন্নয়ন কর্মকর্তা (পিডিও) এবং গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতিকে আমার ২৭ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তারা আমাকে উপেক্ষা করেন। আমি জেলা পঞ্চায়েতের সিইওর সাথেও যোগাযোগ করেছি, কিন্তু কিছুই হয়নি।’ তিনি লিখেছেন।
সুইসাইড নোটে আরও অভিযোগ করা হয়, পিডিও, রাম গৌড়া এবং গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতির স্বামী, মোহন কুমার তাকে ক্রমাগত মানসিক নির্যাতন করে আসছেন।
‘আমি যদি ছুটি চাইতাম, তাহলে তারা আমাকে ছুটি নেয়ার আগে অন্য কাউকে খুঁজে বের করতে বলত। তারা আমাকে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অফিসে থাকতে বাধ্য করত। পিডিও এবং মোহন কুমারের হয়রানির কারণে আমি আমার জীবন শেষ করছি। নোটটিতে কর্তৃপক্ষকে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
ঘটনার পর, পুলিশ পিডিও, গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতি এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে এসসি/এসটি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনে মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে আত্মহত্যার পর, অবহেলা এবং পরিষেবা বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে রাম গৌড়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তবে তিনি কিভাবে আত্মহত্যা করেছেন তা জানানো হয়নি।