একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাতে বিপর্যস্ত ফিলিপাইন। মাত্র এক মাসেই পাঁচটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে, যার ফলে অনেক মানুষের প্রাণহানিসহ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটিকে তছনছ করতে প্রস্তুত আরও দুটি ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়— সুপার টাইফুন উসাগি এবং ক্রান্তীয় ঝড় ম্যান-ই।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফিলিপাইনে এক মাসের মধ্যে পঞ্চম ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে চলেছে। এজন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহরের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দেশটিতে আঘাত হানতে যাওয়া এ ঘূর্ণিঝড়কে উসাগি নামে নামকরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া এক সপ্তাহের ব্যবধানে আরও একটি ঝড়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরকারি তথ্যমতে, কাগায়ন প্রদেশের ২৪ হাজারের বেশি বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আগের টাইফুনের সময় শহর ছেড়ে আসা মানুষেরাও রয়েছেন। তাদের সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
সুপার টাইফুন উসাগি স্থানীয়ভাবে অফেল নামে পরিচিত। এটি প্রদেশে বৃহস্পতিবার বিকালে আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কাগায়ানের দুর্যোগ ত্রাণ অফিসের প্রধান রুয়েলি রেপসিং বলেন, উসাগির বৃষ্টির কারণে কাগায়ান নদীর পানির স্তর আবার বেড়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মধ্য ও দক্ষিণ অংশে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে চলছে। টাইফুনের কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কায় জরুরি জিনিসপত্র যেমন জেনারেটর প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ম্যান-ই নামের আরেকটি ঝড়ও এগিয়ে আসছে। শনিবারের মধ্যে এটি মধ্য ফিলিপাইনে আঘাত হানবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় প্রদেশগুলোতে এ সময়ে সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের এক উপদেষ্টা।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর গড়ে প্রায় ২০টি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় ফিলিপাইনে আঘাত হানে। এর ফলে দেশটিতে ভারি বৃষ্টিপাত, প্রবল ঘূর্ণিঝড় এবং মারাত্মক ভূমিধসের ঘটনা ঘটে।
জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার তথ্যমতে, অক্টোবরে দেশটির প্রধান দ্বীপ লুজানে ঘূর্ণিঝড় ট্রামি এবং কং-রের লুজোনের আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ১৫৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এখনো ২২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।